ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের সিরিজ জয়ী ম্যাচের পাঁচটি আলোচিত বিষয়

ছবির উৎস, Getty Images
আরও একবার ম্যাচসেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার পেয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
আবারও মিরপুরে জমজমাট এক ম্যাচে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত জয়ী দলের খাতায় নাম লেখালো।
যে ভারতের বিপক্ষে সাত বছর কোনও ওয়ানডে ম্যাচ জেতেনি বাংলাদেশ, এবার টানা দুই ম্যাচে জয় দিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করলো লিটন দাশের নেতৃত্বে।
ঢাকায় আজ বাংলাদেশ আগে ব্যাট করে ২৭১ রান তুলেছে, জবাবে ছয় রানে হেরে গেছে রোহিত শর্মার দল।
আরও একবার ম্যাচসেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার পেয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
২০১৫ সাল থেকে ওয়ানডে ফরম্যাটে বাংলাদেশ ১৩টি হোম সিরিজের ১২টিতেই জয় পেয়েছে।
বাংলাদেশের ভঙ্গুর টপ অর্ডার ব্যাটিং
বাংলাদেশের টপ অর্ডার আজও ভালো শুরু এনে দিতে পারেনি।
এনামুল হক বিজয়, লিটন দাশ, নাজমুল শান্ত, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম- কেউই ২৫ রানও তুলতে পারেননি।
৬৬ থেকে ৬৯ রানের ভেতর বাংলাদেশ সাকিব,মুশফিক ও আফিফের উইকেট হারায়।
গত বছর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটি সিরিজ বাদে বাংলাদেশের টপ অর্ডার তেমন অবদান রাখতে পারেনি স্কোরবোর্ডে।
মেহেদী হাসান মিরাজের প্রথম সেঞ্চুরি
জনপ্রিয় টেলিভিশন উপস্থাপক হারশা ভোগলে টুইটারে লিখেছেন, মেহেদী হাসান মিরাজের ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে এমন দুটি ইনিংস তিনি খেলেছেন ভারতের বিপক্ষে।
আগের ম্যাচে নয় উইকেট যাওয়ার পর ম্যাচ জেতানো ব্যাটিং করেছিলেন তিনি। আজ ৬৯ রানে ছয় উইকেট যাওয়ার পর মিরাজ সেঞ্চুরি করলেন, দলকে প্রায় খাদের কিনার থেকে টেনে ২৭১ রানের মতো ফাইটিং স্কোরে নিয়ে যান।
মিরাজের ৮৩ বলে ১০০ রানের এই ইনিংসটিকে অনেকেই বলছেন বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ব্যক্তিগত ইনিংস।
বাকি ব্যাটসম্যানদের যখন ভারতের বোলিং খেলতে কষ্ট হচ্ছিল মিরাজ নেমেই অনায়াসে রান তোলা শুরু করলেন।
চাপের মুখেই তিনি হুট করে ৩২ বলে ৩১ থেকে ৭২ বলে ৭৪ তুলে নিলেন।
শেষ ১৫ রান নিয়েছেন তিনি ৫ বলে।
ছবির উৎস, Getty Images
এটা মেহেদী হাসান মিরাজের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আরও একবার বিপর্যয় ঠেকিয়েছেন
ক্যারিয়ারের বড় অংশজুড়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের খ্যাতি ছিল বাংলাদেশ বিপাকে পড়লে তিনি ব্যাট হাতে হাল ধরেন।
আজ ঠিক সেই কাজটাই করলেন মিরাজের সঙ্গে জুটিতে।
দলের রান ৬৯ থেকে ২১৭ তে নিয়ে যান এ দুজন।
রিয়াদ ৭৭ রানের একটি ইনিংস খেলেন।
এবাদত হোসেন বাংলাদেশের জয়ের ভিত গড়েন
টানা দুই ম্যাচে এবাদত হোসেন উইকেট নিয়েছেন।
রানও দিয়েছেন পরিমিত।
আগের দিন চারটি এবং আজ মিরপুরে তার সুপরিচিত স্যালুট দেখা গেছে তিনবার।
শুরু করেন ভিরাট কোহলিকে বোল্ড করে, এক দৌড়ে বাংলাদেশ ড্রেসিং রুমের সামনে গিয়ে স্যালুট দিয়ে আসেন এবাদত হোসেন।
এরপর আকশার প্যাটেল যখন ভয়ংকর হয়ে উঠতে শুরু করেন তখন এবাদত তার উইকেট নিয়ে নেন।
আকশার যখন ৫৬ বলে ৫৬ রানের ইনিংস খেলেন, তখন মনে হচ্ছিল ভারতের জয় খুব একটা কঠিন হবেনা।
আকশারের পাশাপাশি দীপাক চাহারেরও উইকেট নেন এবাদত।
রোহিত শর্মার ক্যামিও
বাংলাদেশের আজকের জয়েও ছিল নাটকীয়তা।
২০৭ রানে ভারতের সাত উইকেট যাওয়ার পর বাংলাদেশের জয় যখন সময়ের ব্যাপার মনে হচ্ছিল তখন নামেন রোহিত শর্মা।
২৮ বল খেলে ৫১ রান তোলেন রোহিত শর্মা।
এর আগে ফিল্ডিংয়ের সময় হাতে চোট পেয়েছিলেন তিনি।
যে কারণে নিয়মিত ওপেনার হিসেবে তার আজ খেলা হয়নি।
শেষদিকে নেমে বাংলাদেশের বোলিং লাইন-আপকে চমকে দেন ভারতের অধিনায়ক।
৪৫তম ওভারে রোহিত নেন ১৮রান। ৪৯তম ওভারে নেন ২০।
শেষ ওভারে ২০ রান প্রয়োজন ছিল, কিন্তু রোহিত ১৪ রান নিতে পারেন।
মূলত কাজে এসেছে মুস্তাফিজুর রহমানের করা ৪৮তম ওভার, মোহাম্মদ সিরাজকে ক্রিজে রেখে মুস্তাফিজ গুরুত্বপূর্ণ সময়ে একটি মেইডেন ওভার দেন।